MANU

Astrologer Sukanta Manna

🌐 Site Info / সাইট তথ্য

অরন্ধন (রান্না পূজা) | গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য



অরন্ধন (রান্না পূজা) | গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য

অরন্ধন (রান্না পূজা) কী?
বাংলার গ্রামীণ জীবনে অরন্ধন বা রান্না পূজা একটি ঐতিহ্যবাহী আচার। এটি মূলত মা মনসার পূজা উপলক্ষে পালন করা হয়। ‘অরন্ধন’ শব্দের অর্থ হলো রান্না না করা। এই দিনে নতুন করে রান্না না করে আগের দিনের ভাতকে পান্তা করে খাওয়া হয়।

কেন পালন করা হয়?
অরন্ধন পূজার মূল উদ্দেশ্য হলো মা মনসাকে সন্তুষ্ট করা এবং পরিবারের সকলকে সাপের ভয় থেকে রক্ষা করা। বিশ্বাস করা হয়, এই দিনে পান্তা ভাত খেলে দেবীর কৃপা লাভ হয় এবং পরিবারের মঙ্গল ঘটে।

অরন্ধনের প্রচলিত বিভিন্ন নাম
বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে এই পূজা বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন – ইচ্ছা রান্না, গোটা রান্না, ঘাটা রান্না, গাবরা রান্না, বুড়ো রান্না ইত্যাদি। প্রতিটি নামের মধ্যে আলাদা আঞ্চলিক স্বাদ ও রীতি প্রকাশ পায়।


কীভাবে পালন করা হয়?

  • পূজার আগের দিন ভাত সেদ্ধ করে রেখে দেওয়া হয়।
  • পূজার দিনে নতুন করে রান্না করা হয় না।
  • ভাতকে জল দিয়ে পান্তা করা হয় এবং সকলে একত্রে খাওয়া হয়।
  • পান্তার সঙ্গে নুন, কাঁচা লঙ্কা, পেঁয়াজ, মাছ ভাজা ইত্যাদি খাওয়া হয়।
  • পরিবারের সকলে মা মনসার কাছে আশীর্বাদ কামনা করেন।
  • এছাড়াও এই দিনে অনেককে নিমন্ত্রণ করা হয়ে থাকে অতিথি যারা আসেন।

বিশেষ বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা
অরন্ধন পূজা শুধুই আধ্যাত্মিকতার দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ নয়, এর একটি বৈজ্ঞানিক দিকও রয়েছে। এই দিনে যখন পূজা হয়, তখন রান্নাঘর ও সমস্ত আসবাবপত্র পরিষ্কার করা হয়। এর ফলে বছরে অন্তত একবার রান্নাঘরের পুরো অংশ ভালোভাবে পরিষ্কার থাকে, যা খাদ্যের স্বাস্থ্যকর পরিবেশ বজায় রাখতে সাহায্য করে। ফলে পরিবারে রান্না করা খাবার থাকে সুষম ও স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী।


অরন্ধনের সাংস্কৃতিক তাৎপর্য
অরন্ধন শুধু একটি পূজা নয়, এটি গ্রামবাংলার লোকসংস্কৃতির অমূল্য অংশ। এতে একদিকে যেমন ভক্তির প্রকাশ ঘটে, তেমনি অন্যদিকে স্বাস্থ্য, পরিচ্ছন্নতা ও পারিবারিক ঐক্যের বার্তা বহন করে। এছাড়া ও আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে মিলন ঘটে। পরিবারের মধ্যে একটি খুশির পরিবেশ তৈরি হয়।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন